শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৩২ অপরাহ্ন

আপডেট
চরম তারল্যসংকট পুঁজিবাজারে

চরম তারল্যসংকট পুঁজিবাজারে

অনলাইন ডেস্ক: পুঁজিবাজারে ভয়াবহ দরপতন চলছে। ঈদের আগে প্রায় আড়াই মাসের লাগাতার দরপতনে লাখ কোটি টাকার বেশি বাজার মূলধন কমে যায়। ঈদের ছুটি শেষে গত সোমবার লেনদেন শুরু হওয়ার পর চার কর্মদিবসেই পতন দেখা গেছে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই)। এতে সূচক কমেছে ১৭৭ পয়েন্ট বা ৩ শতাংশের বেশি। পুঁজিবাজারে এমন দীর্ঘ পতনের প্রধান কারণ চরম পর্যায়ের তারল্যসংকট।গত জানুয়ারির শেষ দিকে এসে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর থেকে পুঁজিবাজারে দরপতন শুরু হয়। এই পতনকে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার-পরবর্তী ‘বাজার সংশোধন’ বলে দাবি করে আসছিলেন সংশ্লিষ্টরা।ওই বাজার সংশোধনের সময় মার্জিন ঋণের ফোর্সড সেল বাড়তে থাকে। এতে পতন আরও দীর্ঘায়িত হয়। তবে এখন দরপতন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, সাধারণ বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে আর কেউই এটাকে সাধারণ বাজার সংশোধন হিসেবে মানতে নারাজ।ঈদের পর টানা চার দিন দরপতনের পেছনে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যবর্তী সংঘর্ষের বিষয়টি আলোচনায় এনেছেন বাজারসংশ্লিষ্ট অনেকে। যদিও দেশ দুটির দ্বন্দ্বের সরাসরি প্রভাব বাংলাদেশে নেই। তবে মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব রয়েছে বলে দাবি করছেন তাঁরা।তবে সবকিছু ছাপিয়ে বর্তমানে পুঁজিবাজারে একটি সংকটের অস্তিত্ব প্রকট। সেটি হলো তারল্যসংকট। এটিই পুঁজিবাজারের ধারাবাহিক পতনকে ত্বরান্বিত করছে।সুদের হার বেশি হওয়ায় প্রাতিষ্ঠানিক ও বড় বিনিয়োগকারীরা সরকারি ট্রেজারি বিল, বন্ডে বিনিয়োগ করছেন। ব্যক্তিশ্রেণির বড় বিনিয়োগকারীরা এফডিআরে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ  বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক ও বড় বিনিয়োগকারীরা টাকা নিয়ে নিরাপদ বিনিয়োগে চলে গেছেন। টাকা শেয়ারবাজারের বাইরে যাচ্ছে, কিন্তু ঢুকছে না।আবু আহমেদ যোগ করেন, এটা শুরু হয়েছে বছরের শুরুর দিকে, যখন সরকারি ট্রেজারি বিলে সুদের হার সাড়ে ১০ শতাংশের মতো প্রস্তাব করা হয়, তখন থেকেই। চরম তারল্যসংকট চলছে।ডিএসইর তথ্যমতে, গত জানুয়ারির শেষ থেকে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত সময়ে যখন বাজারে হাজার থেকে দেড় হাজার কোটি টাকার ঘরে লেনদেন হয়েছে, তখন শেয়ারের লেনদেন বা ভলিউম হতো প্রায় ৩০ থেকে ৬০ কোটির ঘরে। অথচ বিদায়ী সপ্তাহে পুঁজিবাজারে প্রতিদিন গড় ভলিউম সাড়ে ১৫ কোটি। অর্থাৎ লেনদেন তলানিতে চলে গেছে।ট্রেজার সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ বলেন, সুদের হার চড়া হওয়ায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ট্রেজারি বিলে বিনিয়োগ করছেন। একক বড় বিনিয়োগকারীরা যাচ্ছেন এফডিআরে। কারণ, সেখান থেকে যে রিটার্ন পাওয়া যাচ্ছে, তার অর্ধেকও এখন পুঁজিবাজার থেকে পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, বন্ড বা ফিক্সড ইনকাম সিকিউরিটিজে সব বিনিয়োগ নিয়ে চলে গেছে, এটা শতভাগ সত্য নয়। এটা সম্ভবও নয়। এটা ধারণার ওপর বলা হয়। বাজার এ রকম নিম্নমুখী হলে এই ধরনের বিশ্বাস তৈরি হয়। দীর্ঘ দরপতনের কারণে বিনিয়োগকারীরা আস্থা হারিয়েছেন। তবে এভাবে বাজার থাকবে না। এটা সময়ের ব্যাপার।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |